ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস স্ট্র্যাটেজি ফোরাম (আইসিএসএফ) এর চার সদস্যের একটি প্যানেল গত ৬ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ‘ব্রিটিশ এসোসিয়েশন ফর সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ’ (বাসাস) আয়োজিত বার্ষিক সম্মেলন ২০১৬-তে চারটি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করে।
দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাসের আলোকে এ বছরের সম্মেলন ৬-৮ এপ্রিল যুক্তরাজ্যের ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আইসিএসএফ প্যানেলের শিরোনাম ছিল “ধর্মনিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় উগ্রবাদ: বাংলাদেশ ও অভিবাসী জনগোষ্ঠী”।
“বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষতার ধারা এবং প্রতিবন্ধকতা” শীর্ষক প্রথম প্রবন্ধে রোকেয়া চৌধুরী বলেন – সাধারণ মানুষের মনোভাব নয়, বরং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মের অপব্যবহারই ধর্মনিরপেক্ষতার মূল প্রতিবন্ধক।
শাহবাগ আন্দোলনের প্রেক্ষাপট ও ধারাবাহিকতা পর্যালোচনা নিয়ে দ্বিতীয় প্রবন্ধটি ছিল এম সানজিব হোসেন এর। তিনি বলেন – যুদ্ধাপরাধের সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে আইনে অন্তর্নিহিত অসামঞ্জস্য দূর করার পাশাপাশি শাহবাগের সোচ্চার অবস্থান ছিল ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশের পক্ষেও। শাহবাগের পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লিগ এবং বামপন্থি দলগুলোর করণীয় হবে মধ্যপন্থা ছেড়ে ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষে স্পষ্ট অবস্থান নেয়া।
প্যানেলের তৃতীয় প্রবন্ধে শাহবাগ পরবর্তী সময়ে ব্লগার, লেখক ও প্রকাশক হত্যার বিষয়টি উঠে আসে। “কলম বনাম চাপাতি : ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ গড়ার সংগ্রাম”- শীর্ষক হাসিব মাহমুদ এবং রায়হান রশিদের যৌথভাবে লিখিত প্রবন্ধটি উপস্থাপন করার সময় হাসিব মাহমুদ বলেন – এই হত্যাগুলোর ক্ষেত্রে নাস্তিকতা, মুক্তচিন্তার চর্চা, বা যুদ্ধাপরাধের বিচার, এবং আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ – এর কোনটিই একমাত্রিকভাবে নয় বরং প্রতিটিই সামষ্টিকভাবে উপস্থিত। তাই যে কোন খণ্ডিত বা একমাত্রিক বিশ্লেষণ এই হত্যাগুলোর বিচার এবং প্রতিরোধ প্রক্রিয়াকেই বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
এছাড়াও, তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর দিক থেকে অপরাধ দমন ও সন্ত্রাস দমন এই দু’টো ভিন্ন ধারার কর্মপন্থার মধ্যে অন্তর্নিহিত যে সব অসঙ্গতি এবং চ্যালেঞ্জ সেগুলোও তুলে ধরা হয় এই প্রবন্ধে।
এসব হত্যার প্রশ্নে সরকারের পক্ষ থেকে একই সাথে বিচারের আশ্বাস ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত না করার হুশিয়ারির দ্বৈত নীতিকেও প্রশ্ন করা হয়।
প্যানেলের সর্বশেষ প্রবন্ধটি ছিল বিদিত দে এবং হাসিব মাহমুদের, প্যানেল সঞ্চালক বিদিত দে প্রবন্ধটি উপস্থাপনকালে ব্রিটেনে অভিবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে আত্মপরিচয়ের সঙ্কট, জঙ্গিবাদের উত্থান এবং বাংলাদেশে ইসলামপন্থী দলগুলোর সাথে অভিবাসী বাংলাদেশিদের সংশ্লিষ্টতা বিষয়ে আলোকপাত করেন।
প্রবন্ধ পাঠ শেষে প্রশ্নোত্তর পর্বে শ্রোতারা পাকিস্তানে জামায়াতে ইসলামের সাথে জামায়াতে ইসলাম বাংলাদেশের সংশ্লিষ্টতা, যুদ্ধাপরাধী এই দলটি সম্পর্কে মানুষের মনোভাব, জঙ্গিবাদের উত্থানে মিডিয়ার ভূমিকা, শাহবাগ এবং হেফাজতে ইসলামের সমর্থকদের আর্থসামাজিক অবস্থা ইত্যাদি নানা বিষয়ে প্রশ্ন করেন।
সূত্র:
—–
– সিলেটটুডে২৪
– মানবকন্ঠ