TwitterFacebook

মাননীয় আইনমন্ত্রী, আপনি ভুল বলছেন

সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হক আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ‘সংগঠন’ হিসেবে জামায়াতে ইসলামীকে বিচার করার প্রসঙ্গে কিছু মন্তব্য করেছেন যা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। কি বলেছেন আমাদের মাননীয় মন্ত্রী? ৩০ মে, ২০১৪ তারিখে টেলিভিশনে প্রচারিত তাঁর বক্তব্য হুবুহু তুলে দিচ্ছিঃ

“যেই ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইব্যুনাল) এক্ট যেটা আছে ১৯৭৩ এবং যেটা সংশোধন করা হয়েছে, সেই আইনের মধ্যে কিন্তু এরকম কোন রাজনৈতিক দলকে বিচার করা এবং তাকে শাস্তি দেয়ার কোন বিধান নাই। […] তদন্ত রিপোর্ট একটা আছে, সঠিক, কিন্তু এই পর্যায়ে অন্যান্য পারিপার্শ্বিক দিকগুলো বিবেচনা করে আমাকে এগিয়ে যেতে হবে। […] এই সংগঠনের যারা হর্তাকর্তা ছিলেন যারা এই মানবতা বিরোধী অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত করেছেন তাদেরকে কিন্তু অলরেডি বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। সেই ক্ষেত্রে দোবারা দ্বিতীয়বারের মতন এদেরকে আবার একটা শাস্তি দিলে এই যে আগে যে শাস্তি দেয়া হয়েছে তার সাথে কিন্তু এটা সাংঘর্ষিক হবে কিনা সেটাও আমাদেরকে বিবেচনা করতে হবে।”[i] পরবর্তীতে ৩১ মে, ২০১৪ তারিখে মাননীয় মন্ত্রী আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ ঢাকা বারের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে বলেনঃ “[…] ২০ ধারায় যেই শাস্তির কথা বলা আছে সেখানে সংগঠনকে শাস্তি দেয়ার কোন ধারা নাই। কোন উপায় নাই।”[ii]Advocate Anisul Hoque

মুক্তিযুদ্ধ ও ১৯৭১ সালে সংঘটিত আন্তর্জাতিক অপরাধ বিচারের দাবীতে আন্দোলনরত বিভিন্ন সংগঠন আইনমন্ত্রীর এইসব বক্তব্যের প্রতিবাদ করেছে।[iii]প্রতিবাদের ঝড় বয়ে যাওয়ার পর বিডিনিউজ২৪-এর সর্বশেষ রিপোর্টে (৩১ মে, ২০১৪) লক্ষ্য করা যায় যে এডভোকেট আনিসুল হক তাঁর আগের বক্তব্য থেকে কিছুটা সরে এসেছেন। আইনে সংগঠনকে ‘বিচার’ করার বিধান আছে কি নেই সে সম্পর্কে এবার তিনি কোন মন্তব্য না করে তিনি জানান যে আন্তর্জাতিক অপরাধ বিচার সংক্রান্ত আইনে সংগঠনকে সাজা দেয়ার সুনির্দিষ্ট বিধান না থাকার কারণে আইন সংশোধন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।[iv] তিনি বলেনঃ “সংগঠনকে কী রকম সাজা দেওয়া যাবে, কী রকম সাজা হবে তা এখানে পরিষ্কার কিছু নেই।”[v] মাননীয় মন্ত্রীর কাছে যখন জানতে চাওয়া হয় আইনটিকে সংশোধন করার বিল সংসদে কবে নাগাদ উত্থাপন করা হবে, তিনি বলেনঃ “এটাই মূল প্রশ্ন। এ কথাটাই আমি বলতে চেয়েছিলাম – আইনে সংশোধনী আনার বিষয়ে আমার মন্ত্রণালয়কে ইতোমধ্যে [বৃহস্পতিবার] ইন্সট্রাকশন দিয়েছি। এখানে যে পরিবর্তনটা দরকার সে পরিবর্তনটা বিচার কাজ শুরু হওয়ার আগেই করা দরকার।”[vi]

আজকের লেখার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আইনমন্ত্রীর বক্তব্য আইনের চোখে কতটুকু যথার্থ তা বিশ্লেষণ করা। প্রথমেই এডভোকেট আনিসুল হকের একটি ছোট ভুল ধরিয়ে দেই। যেই আইনের মাধ্যমে বাংলাদেশের দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে গঠন করা হয়েছে এবং পরিচালিত করা হচ্ছে, সেই আইনকে মাননীয় মন্ত্রী বলছেন ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইব্যুনাল) এক্ট’। সঠিক নামটি হচ্ছে ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইব্যুনালস) এক্ট, ১৯৭৩’। খেয়াল করেছি কেউ কেউ ভুলবশত ‘ট্রাইব্যুনালস’ এর স্থানে ‘ট্রাইব্যুনাল’ বলে থাকেন। আইনটি পড়েননি বা আইনটি সম্পর্কে পর্যাপ্ত ধারণা রাখেন না এমন মানুষ এই ভুলটি করতেই পারেন। কিন্তু ভুলটি যখন স্বয়ং আমাদের দেশের মাননীয় আইন মন্ত্রী করে ফেলেন তখন চিন্তিত হওয়া ছাড়া কোন উপায় থাকে না।

শুধুমাত্র আইনের নাম সংক্রান্ত বিষয়ে যদি আইনমন্ত্রীর ভ্রান্ত ধারণা সীমাবদ্ধ থাকতো, তাহলেও মেনে নেয়া যেত। তবে দুঃখজনক হলেও বর্তমান বাস্তবতা ভিন্ন। নিশ্চিতভাবেই বলা যায় বর্তমান আইনমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন ১৯৭৩ এর বিভিন্ন বিধান ও তার প্রয়োগ সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা পোষণ করেন।

আইনমন্ত্রীর মত অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন ১৯৭৩-এ “কোন রাজনৈতিক দলকে বিচার করা এবং তাকে শাস্তি দেয়ার কোন বিধান নাই”[vii]। এমনকি ২০১৩ সালে আইনটির ৩(১) ধারা সংশোধন করার পরও বিচার করা এবং শাস্তি দেয়া সম্ভব না। মাননীয় মন্ত্রীর মন্তব্যের ফলে দুটি প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছেঃ ১) আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন ১৯৭৩-এ জামায়াতে ইসলামীর মত রাজনৈতিক দলকে বিচার করার বিধান আছে কিনা; ২) বিচার করা গেলেও শাস্তি দেয়ার বিধান আছে কিনা।

প্রথম প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে আমাদের ৩(১) ধারায় যা বলা আছে তার উপর মনোনিবেশ করতে হবে। আইনের ৩(১) ধারা ২০১৩ সালে সংশোধন করে হয়। পাঠকদের সুবিধার্থে সংশোধিত ৩(১) ধারাটি হুবুহু তুলে দেয়া হলোঃ “A Tribunal shall have the power to try and punish any individual or group of individuals, or organisation, or any member of any armed, defence or auxiliary forces, irrespective of his nationality, who commits or has committed, in the territory of Bangladesh, whether before or after the commencement of this Act, any of the crimes mentioned in sub-section (2).”[viii]

পরিষ্কারভাবেই দেখা যাচ্ছে ‘or organisation’ শব্দগুলো ৩(১) ধারায় উল্লেখ আছে। অর্থাৎ, জামায়াতে ইসলামীকে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন ১৯৭৩ এর অধীনে সংগঠন বা ‘organisation’ হিসেবে বিচার করা সম্ভব।

তারপরও প্রশ্ন থেকে যায়। তবে কি বিচার করা গেলেও শাস্তি দেয়ার বিধান আমাদের আইনে নেই? চলুন দেখে নেই শাস্তির বিধান সংক্রান্ত ২০(২) ধারায় কি লেখা আছেঃ “Upon conviction of an accused person, the Tribunal shall award sentence of death or such other punishment proportionate to the gravity of the crime as appears to the Tribunal to be just and proper.”[ix]

এই ধারায় “person” বলতে ব্যক্তি (natural person) এবং আইনগত সত্ত্বা বা সংগঠন (legal person) বোঝানো হচ্ছে, যাদের কথা ৩(১) ধারায় উল্লেখ করা আছে। ফলে ৩(১) এবং ২০(২) ধারাগুলো পর পর পড়লে যেই অর্থ দাড়ায় তা হলো, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অবশ্যই ‘organisation’ বা ‘সংগঠন’কে শাস্তি দিতে পারে। আইন সম্পর্কে গভীর ধারণা রাখেন না এমন ব্যক্তিও বুঝতে সক্ষম হবেন যে সংগঠনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া যায় না। কিন্তু সেই একই ব্যক্তির বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা না যে সংগঠনকে ‘other punishment proportionate to the gravity of the crime’ প্রদান করতে ট্রাইব্যুনাল অবশ্যই পারবে, কারণ সেই বিধান ২০(২) ধারায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে। ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস স্ট্র্যাটেজি ফোরাম এর মতে, “[…] সংগঠনের ক্ষেত্রেপ্রযোজ্য শাস্তির ধরণ সঙ্গতভাবেই ব্যক্তিকে প্রদত্ত শাস্তির ধরণ থেকে স্বতন্ত্র হতে পারেযা ট্রাইবুনালের বিজ্ঞ বিচারকবৃন্দ তাদের সুবিবেচনা প্রয়োগ করেচূড়ান্তভাবে নির্ধারণ করার যোগ্যতা রাখেন[x]

ফলে, বর্তমান আইনে শাস্তি প্রদানের এমন বিস্তৃত বিধান থাকার পরও সেই আইনকে সংশোধন করে সংগঠনকে সাজা দেয়ার জন্য সুনির্দিষ্ট বিধান অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত অনেকের কাছেই যুক্তিসঙ্গত মনে হচ্ছে না।

মাননীয় মন্ত্রী অবশ্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াতে ইসলামীকে আপাতত বিচার না করার পেছনে আরো দুটো কারণ উল্লেখ করেছেন। তার মতে, যেহেতু জামায়াতের নিবন্ধনের ব্যাপারে একটি মামলা ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে চলমান আছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন ১৯৭৩-এর অধীনে জামায়াতের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনলে তা ঐ মামলায় প্রভাব ফেলবে।[xi] এডভোকেট আনিসুল হক সম্ভবত ‘multiplicity of proceedings/suits’-এর কথা ভেবে ধারণা করেছেন যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াতের বিরুদ্ধে মামলা হলে সেই মামলা সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের মামলার উপর প্রভাব ফেলবে। এই ক্ষেত্রেও তাঁর ধারণা ভুল বলেই পরিগণিত হবে কারণ ‘multiplicity of proceedings/suits’ ঘটে তখনই যখন একই বিষয়ে দুটি মামলা দায়ের করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে জামায়াতের বিরুদ্ধে যেই মামলা চলছে তা হচ্ছে দলটির নিবন্ধন সংক্রান্ত। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল যদি সংগঠন হিসেবে জামায়াতের বিচার করতো তাহলে বিচার্য বিষয় হতো ১৯৭১ সালে সংগঠন হিসেবে জামায়াতের সংঘটিত আন্তর্জাতিক অপরাধ। ফলে দুটি মামলার একটিও একে অপরকে প্রভাবিত করার সম্ভাবনা বা সুযোগ নেই। এডভোকেট আনিসুল হক-এর মত একজন পণ্ডিত আইনজীবীর তো এইসব বিষয়গুলো অজানা থাকার কথা নয়।

মাননীয় আইনমন্ত্রী বাংলাদেশের অন্যান্য আইনের উদাহরণ টেনে জানিয়েছেন যে, “যদি কোনো সংগঠন, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি অপরাধ করে, তবে ওই সংগঠন বা প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বা নিয়ন্ত্রককে দায়দায়িত্ব নিতে হবে এবং দায়ী কর্মকর্তাদের শাস্তি দেওয়া হবে।[xii] এই কারণেই তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেনঃ “এই সংগঠনের যারা হর্তাকর্তা ছিলেন যারা এই মানবতা বিরোধী অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত করেছেন তাদেরকে কিন্তু অলরেডি বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। সেই ক্ষেত্রে দোবারা দ্বিতীয়বারের মতন এদেরকে আবার একটা শাস্তি দিলে এই যে আগে যে শাস্তি দেয়া হয়েছে তার সাথে কিন্তু এটাসাংঘর্ষিক হবে কিনা সেটাও আমাদেরকে বিবেচনা করতে হবে।”[xiii] এডভোকেট আনিসুল হক ভুলে যাচ্ছেন যে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন, ১৯৭৩ একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ আইন। উদাহরণ স্বরূপ আইনের ২৩ ধারা উল্লেখ করা যেতে পারে। এই ধারায় বলা আছে যে বাংলাদেশের Criminal Procedure Code, 1898 এবং Evidence Act, 1872-এর বিধি বিধান ট্রাইব্যুনালের কোন কার্যক্রমে প্রযোজ্য হবে না।[xiv] ফলে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন ১৯৭৩-এর সাথে বাংলাদেশের অন্যান্য আইনের এমন সরল তুলনা চলে না। ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) বিল সংক্রান্ত সংসদীয় বিতর্ক পড়লে জানা যায় যে নুরেমবার্গ চার্টারের[xv] বিধান আমাদের আইন তৈরির প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করেছিল এবং আইনের ভেতর কিছু জায়গায় স্থান পেয়েছিল। মাননীয় আইনমন্ত্রী হয়তো জানেন না যে বিখ্যাত নুরেমবার্গ ট্রায়ালেও শুধুমাত্র ব্যক্তি নয়, সংগঠনেরও বিচার হয়েছিল। ফলে ইন্টারন্যাশনাল মিলিটারি ট্রাইব্যুনাল (আইএমটি) বিভিন্ন ব্যক্তিদের শাস্তি প্রদানের পাশাপাশি নাৎসি পার্টির ‘leadership corps’, ‘Die Sicherheitsdienst des Reichsfuehrer SS (SD)’, ‘Die Schutzstaffeln Der Nationalsocialistischen Deutschen Arbeiterpartei (SS)’-কেও শাস্তিস্বরূপ ‘criminal organisation’ হিসেবে ঘোষণা করেছিল।[xvi] যেহেতু আমাদের বর্তমান আইনে ২০(২) ধারায় শাস্তি প্রদানের বিস্তৃত বিধান রয়েছে, প্রমাণ সাপেক্ষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জামায়াতে ইসলামীকে একটি ‘criminal organisation’ হিসেবে ঘোষণা করতে পারে। এমনটি করলে তা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কোন ব্যক্তির বিচার প্রক্রিয়ার সাথে সাংঘর্ষিক হওয়ার সুযোগ নেই। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ইতিমধ্যেই তার কয়েকটি রায়ে জামায়াতে ইসলামীকে একটি ‘criminal organisation’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।[xvii]International Military Tribunal (IMT)

তাহলে দেখা যাচ্ছে যে মাননীয় আইনমন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হক যে আইনি ব্যাখ্যা দিয়েছেন তা সঠিক নয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন ১৯৭৩-এর অধীনে জামায়াতে ইসলামীকে সংগঠন হিসেবে বিচার করা এখনই সম্ভব। আইন সংশোধনের কোন প্রয়োজন নেই।

একটি সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়ে আলোকপাত করে আজকের লেখা শেষ করছি। এডভোকেট আনিসুল হক, বিখ্যাত আইনজীবী প্রয়াত সিরাজুল হক-এর সন্তান। এডভোকেট সিরাজুল হক-এর মত মানুষরাই আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন-এর জন্ম দিয়েছিলেন ১৯৭৩ সালে। সেই সময়কার সংসদীয় বিতর্ক পড়ে আমরা তা জানতে পেরেছি। সিরাজুল হক’এর ইংরেজি ভাষায় দেয়া ভাষণ আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। অথচ তাঁরই সন্তান এডভোকেট আনিসুল হকআন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসেকিউটর পদ প্রত্যাখ্যান করেছিলেন কারণ তাঁর মা তা চাননি বলে।[xviii] কিন্তু আশ্চর্য হই যখন জানতে পারি এডভোকেট আনিসুল হক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এস তাহের আহমেদ-এর হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতপন্থি আসামী ড. মিয়া মো. মহিউদ্দিন-এর সিনিয়র আইনজীবী ছিলেন।[xix]International Crimes Tribunal

মাননীয় আইনমন্ত্রী, আপনার আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন ১৯৭৩ সম্পর্কে সঠিক ধারণা নেই। কিন্তু গল্পের শেষ কি আসলে সেখানে? ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসেকিউটর পদ আপনি গ্রহণ করেননি বটে, তবে অর্থের বিনিময়ে আপনি একজন চিহ্নিত জামায়াতপন্থি ব্যক্তির পক্ষে মামলা লড়েছেন। এই পরিস্থিতিতে আইনমন্ত্রী হিসেবে স্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সম্পর্কে মন্তব্য করার নৈতিক অধিকার আপনার আছে কি?

[i] < https://www.youtube.com/watch?v=032J6ZU_MnQ&feature=youtu.be > (লিঙ্কটিতে সর্বশেষ মে ৩১, ২০১৪ তারিখে প্রবেশ করা হয়েছিল)

[ii] < https://www.youtube.com/watch?v=gREZJLm2FS8&feature=youtu.be > (লিঙ্কটিতে সর্বশেষ মে ৩১, ২০১৪ তারিখে প্রবেশ করা হয়েছিল)

[iii] গণজাগরণ মঞ্চ, ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস স্ট্র্যাটেজি ফোরাম (আইসিএসএফ) ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি সুস্পষ্টভাবে আইনমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদ করেছে। দেখুনঃ ‘জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা নিয়ে জটিলতা কাটেনি – আইনমন্ত্রীর বক্তব্যে তীব্র ক্ষোভ’ দৈনিক জনকণ্ঠ (৩০ মে, ২০১৪) <http://www.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=15&dd=2014-05-30&ni=174385 >; < ‘Jamaat Trial: ICSF disagrees with law minister’ Dhaka Tribune (30 May, 2014) < http://www.dhakatribune.com/bangladesh/2014/may/30/jamaat-trial-icsf-disagrees-law-minister >; < ‘আইনমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহার চায় গণজাগরণ মঞ্চ’ বিডিনিউজ২৪ (৩০ মে ২০১৪) < http://bangla.bdnews24.com/bangladesh/article795275.bdnews > (লিঙ্কগুলোতে সর্বশেষ মে ৩১, ২০১৪ তারিখে প্রবেশ করা হয়েছিল)

[iv] ‘জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতার প্রশ্নই উঠে না: আইনমন্ত্রী’ বিডিনিউজ২৪ (৩১ মে ২০১৪) < http://bangla.bdnews24.com/bangladesh/article795738.bdnews > (লিঙ্কটিতে সর্বশেষ মে ৩১, ২০১৪ তারিখে প্রবেশ করা হয়েছিল)

[v] দেখুন ফুটনোট ৪

[vi] দেখুন ফুটনোট ৪

[vii] দেখুন ফুটনোট ১

[viii] < http://bdlaws.minlaw.gov.bd/sections_detail.php?id=435&sections_id=12479 > (লিঙ্কটিতে সর্বশেষ মে ৩১, ২০১৪ তারিখে প্রবেশ করা হয়েছিল)

[ix] < http://bdlaws.minlaw.gov.bd/sections_detail.php?id=435&sections_id=12496 > (লিঙ্কটিতে সর্বশেষ মে ৩১, ২০১৪ তারিখে প্রবেশ করা হয়েছিল)

[x] ‘আইনমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রত্যুত্তর: “আইনটি পূর্ণাঙ্গ, ট্রাইবুনালে সংগঠনের বিচারে কোন বাধা নেই”’ ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস স্ট্র্যাটেজি ফোরাম (৩০ মে ২০১৪) < http://icsforum.org/response-to-law-minister/ > (লিঙ্কটিতে সর্বশেষ মে ৩১, ২০১৪ তারিখে প্রবেশ করা হয়েছিল)

[xi] ‘জামায়াতের বিচার থেকে সরে আসছে সরকার?’ দৈনিক প্রথম আলো (৩০ মে ২০১৪) < http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/229228/জামায়াতের_বিচার_থেকে_সরে_আসছে_সরকার > (লিঙ্কটিতে সর্বশেষ মে ৩১, ২০১৪ তারিখে প্রবেশ করা হয়েছিল)

[xii] দেখুন ফুটনোট ১১

[xiii] দেখুন ফুটনোট ১

[xiv] < http://bdlaws.minlaw.gov.bd/sections_detail.php?id=435&sections_id=12499 > (লিঙ্কটিতে সর্বশেষ মে ৩১, ২০১৪ তারিখে প্রবেশ করা হয়েছিল)

[xv] ‘Charter of the International Military Tribunal’ The Avalon Project < http://avalon.law.yale.edu/imt/imtconst.asp > (লিঙ্কটিতে সর্বশেষ মে ৩১, ২০১৪ তারিখে প্রবেশ করা হয়েছিল)

[xvi] ‘Judgement: The Accused Organizations’ The Avalon Project < http://avalon.law.yale.edu/imt/judorg.asp > (লিঙ্কটিতে সর্বশেষ মে ৩১, ২০১৪ তারিখে প্রবেশ করা হয়েছিল)

[xvii] ‘Declare Jamaat-e-Islami (Bangladesh) a terrorist organisation’ International Crimes Strategy Forum (7 January 2014) <http://icsforum.org/declare-jamaat-e-islami-bangladesh-a-terrorist-organisation/ > (লিঙ্কটিতে সর্বশেষ মে ৩১, ২০১৪ তারিখে প্রবেশ করা হয়েছিল)

[xviii] এই ভিডিওটির ২২ মিনিট ০৬ সেকেন্ড থেকে ২২ মিনিট ২৫ সেকেন্ড পর্যন্ত দেখুনঃ <  https://www.youtube.com/watch?v=jdUt1Vzb0sE >(লিঙ্কটিতে সর্বশেষ মে ৩১, ২০১৪ তারিখে প্রবেশ করা হয়েছিল)

[xix] ‘ড. তাহের হত্যামামলায় দুজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল’ বিডিনিউজ২৪ (২১ এপ্রিল ২০১৩) < http://bangla.bdnews24.com/bangladesh/article616152.bdnews > (লিঙ্কটিতে সর্বশেষ মে ৩১, ২০১৪ তারিখে প্রবেশ করা হয়েছিল)

* লেখাটি জুন ১, ২০১৪ তারিখে বিডিনিউজ২৪-এ প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল।

পোস্ট কিংবা মন্তব্যে প্রকাশিত বক্তব্য কোন অবস্থাতেই আইসিএসএফ এর নিজস্ব মতামতের বা অবস্থানের পরিচায়ক নয়। বক্তব্যের দায়ভার লেখক এবং মন্তব্যকারীর নিজের। শুধুমাত্র আইসিএসএফ নামের আওতায় প্রকাশিত বক্তব্যই ব্লগের সামষ্টিক অবস্থানকে নির্দেশ করবে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Comments

comments

Archive I: Media Archive

Archives news reports, opinions, editorials published in different media outlets from around the world on 1971, International Crimes Tribunal and the justice process.

Archive II: ICT Documentation

For the sake of ICT’s legacy this documentation project archives, and preserves proceeding-documents, e.g., judgments, orders, petitions, timelines.

Archive III: E-Library

Brings at fingertips academic materials in the areas of law, politics, and history to facilitate serious research on 1971, Bangladesh, ICT and international justice.

Archive IV: Memories

This archive records from memory the nine-month history of 1971 as experienced and perceived by individuals from all walks of life.