গত ২৯ মে ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনে প্রচারিত প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হক এর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে সংগঠন হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বিচার বিষয়ে কিছু মন্তব্য আইসিএসএফ এর গোচরে এসেছে। সে সব মন্তব্যে প্রাসঙ্গিক আইনের বিষয়ে আইনমন্ত্রীর ব্যাখ্যা এবং অবস্থানের সাথে সঙ্গত কারণেই আইসিএসএফ দ্বিমত পোষণ করে।
আইনমন্ত্রী দাবী করেছেন – সংশোধিত আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইবুনালস) আইন ১৯৭৩ এ ‘কোন রাজনৈতিক দলকে বিচার করা বা তাকে শাস্তি দেয়ার কোন বিধান নেই’। আইসিএসএফ আইনমন্ত্রীর এই ধারণাকে সঠিক মনে করে না। আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইবুনালস) আইন ১৯৭৩ এর ৩(১) ধারাটি ২০১৩ সালে সংশোধন করে স্পষ্টতই যে কোন “সংগঠন” (organisation) এর তদন্ত, বিচার, এবং শাস্তির বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সন্দেহাতীতভাবে এই আইন অনুযায়ী – ১৯৭১ সালে সংঘটিত আন্তর্জাতিক অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত যে কোন সংগঠনের বিচারকার্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের এখতিয়ারভুক্ত। একইভাবে, সংশোধিত ৩(১) ধারার ফলে আইনটির ৩(২) ধারায় ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার ব্যক্তির দায়ের (individual responsibility) পাশাপাশি সংগঠনের দায়বদ্ধতার ক্ষেত্রেও নিশ্চিতভাবে প্রয়োগযোগ্য।
অভিযুক্ত সংগঠনের শাস্তি দেয়ার ক্ষেত্রেও আইনটির বিধান অত্যন্ত স্পষ্ট বলে আইসিএসএফ মনে করে। আইনে শাস্তি সংক্রান্ত বিধানটির পরিসর অত্যন্ত বিস্ত্ৃত, যেখানে ২০(১) ধারায় “অভিযুক্ত ব্যক্তি” কথাটি সংশোধিত ৩(১) ধারার ফলে শুধুমাত্র ব্যক্তির (natural person) ক্ষেত্রেই নয়, বর্তমান আইন অনুযায়ী তা যে কোন আইনগত সত্ত্বা বা সংগঠন (legal person) এর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য বলে বিবেচিত হবে। উপরন্তু, ব্যক্তি বা সংগঠনের ক্ষেত্রে প্রদত্ত শাস্তির ধরণের ক্ষেত্রেও আইনটিতে বিচারকদের হাতে অত্যন্ত বিস্তৃত ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। আইনের ২০(২) ধারা অনুযায়ী অপরাধের গুরুত্ব অনুযায়ী বিচারকগণ যে কোন ধরণের উপযুক্ত শাস্তি ঘোষণা করার ক্ষমতা রাখেন। সুতরাং, ইতোমধ্যে ট্রাইবুনালে বিভিন্ন ব্যক্তির বিচার এবং ঘোষিত শাস্তির সাথে সংগঠন হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বিচারের কোন সম্পর্ক নেই। কারণ সংগঠনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য শাস্তির ধরণ সঙ্গতভাবেই ব্যক্তিকে প্রদত্ত শাস্তির ধরণ থেকে স্বতন্ত্র হতে পারে, যা ট্রাইবুনালের বিজ্ঞ বিচারকবৃন্দ তাদের সুবিবেচনা প্রয়োগ করে চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ করার যোগ্যতা রাখেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ সংঘটনের কারণে সংগঠন হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের কোন আদালতে কোন মামলাই বর্তমানে চলছে না। সুতরাং, জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে বিচারাধীন নিবন্ধন সংক্রান্ত মামলাটির সাথে ট্রাইবুনালে জামায়াতে ইসলামীর বিচারের কোন সম্পর্ক নেই।
পরিশেষে, আইসিএসএফ মনে করে ট্রাইবুনালের আইন অনুযায়ী সংগঠন হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বিচার কিংবা শাস্তিযোগ্যতার বিষয়টি একটি বিচার্য বিষয়, যা চূড়ান্তভাবে নির্ধারণের এখতিয়ার কেবলমাত্র ট্রাইবুনালের মাননীয় বিচারকদের হাতে ন্যস্ত। তাই আইসিএসএফ গভীর উদ্বেগের সাথে মনে করে – আইনমন্ত্রীর পক্ষ থেকে এ ধরণের আগাম বক্তব্য এবং আইনের আগাম ব্যাখ্যা শুধুমাত্র জনমনে বিভ্রান্তিই নয়, তা একটি স্বাধীন ট্রাইবুনালের বিচার প্রক্রিয়ার উপর সরকারের হস্তক্ষেপ বা প্রভাব বিস্তার হিসেবে গণ্য হওয়ার সুযোগও তৈরী করে।
আইসিএসএফ এর পক্ষ থেকে প্রত্যাশা থাকবে জামায়াতের বিরুদ্ধে ট্রাইবুনালে তদন্তকৃত মামলাটি তার নিজস্ব গতিতে অগ্রসর হবে।
[Download link:
20140530-response to lm statement]
=================
NOTES:
[a] The amended section 3(1) of the International Crimes (Tribunals) Act 1973 reads: “A Tribunal shall have the power to try and punish any individual or group of individuals, or ORGANISATION, or any member of any armed, defence or auxiliary forces, irrespective of his nationality, who commits or has committed, in the territory of Bangladesh, whether before or after the commencement of this Act, any of the crimes mentioned in sub-section (2).”
[b] Section 20 of the ICTA’73 reads:
“(1) The Judgement of a Tribunal as to the guilt or the innocence of any ACCUSED PERSON shall give the reasons on which it is based: Provided that each member of the Tribunal shall be competent to deliver a judgement of his own.
(2) Upon conviction of an ACCUSED PERSON, the Tribunal shall award sentence of death or SUCH OTHER PUNISHMENT proportionate to the gravity of the crime as appears to the Tribunal to be just and proper.”
গত ২৯ মে ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনে প্রচারিত প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হক এর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে সংগঠন হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বিচার বিষয়ে কিছু মন্তব্য আইসিএসএফ এর গোচরে এসেছে। সে সব মন্তব্যে প্রাসঙ্গিক আইনের বিষয়ে আইনমন্ত্রীর ব্যাখ্যা এবং অবস্থানের সাথে সঙ্গত কারণেই আইসিএসএফ দ্বিমত পোষণ করে।
আইনমন্ত্রী দাবী করেছেন – সংশোধিত আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইবুনালস) আইন ১৯৭৩ এ ‘কোন রাজনৈতিক দলকে বিচার করা বা তাকে শাস্তি দেয়ার কোন বিধান নেই’। আইসিএসএফ আইনমন্ত্রীর এই ধারণাকে সঠিক মনে করে না। আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইবুনালস) আইন ১৯৭৩ এর ৩(১) ধারাটি ২০১৩ সালে সংশোধন করে স্পষ্টতই যে কোন “সংগঠন” (organisation) এর তদন্ত, বিচার, এবং শাস্তির বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সন্দেহাতীতভাবে এই আইন অনুযায়ী – ১৯৭১ সালে সংঘটিত আন্তর্জাতিক অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত যে কোন সংগঠনের বিচারকার্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের এখতিয়ারভুক্ত। একইভাবে, সংশোধিত ৩(১) ধারার ফলে আইনটির ৩(২) ধারায় ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার ব্যক্তির দায়ের (individual responsibility) পাশাপাশি সংগঠনের দায়বদ্ধতার ক্ষেত্রেও নিশ্চিতভাবে প্রয়োগযোগ্য।
অভিযুক্ত সংগঠনের শাস্তি দেয়ার ক্ষেত্রেও আইনটির বিধান অত্যন্ত স্পষ্ট বলে আইসিএসএফ মনে করে। আইনে শাস্তি সংক্রান্ত বিধানটির পরিসর অত্যন্ত বিস্ত্ৃত, যেখানে ২০(১) ধারায় “অভিযুক্ত ব্যক্তি” কথাটি সংশোধিত ৩(১) ধারার ফলে শুধুমাত্র ব্যক্তির (natural person) ক্ষেত্রেই নয়, বর্তমান আইন অনুযায়ী তা যে কোন আইনগত সত্ত্বা বা সংগঠন (legal person) এর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য বলে বিবেচিত হবে। উপরন্তু, ব্যক্তি বা সংগঠনের ক্ষেত্রে প্রদত্ত শাস্তির ধরণের ক্ষেত্রেও আইনটিতে বিচারকদের হাতে অত্যন্ত বিস্তৃত ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। আইনের ২০(২) ধারা অনুযায়ী অপরাধের গুরুত্ব অনুযায়ী বিচারকগণ যে কোন ধরণের উপযুক্ত শাস্তি ঘোষণা করার ক্ষমতা রাখেন। সুতরাং, ইতোমধ্যে ট্রাইবুনালে বিভিন্ন ব্যক্তির বিচার এবং ঘোষিত শাস্তির সাথে সংগঠন হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বিচারের কোন সম্পর্ক নেই। কারণ সংগঠনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য শাস্তির ধরণ সঙ্গতভাবেই ব্যক্তিকে প্রদত্ত শাস্তির ধরণ থেকে স্বতন্ত্র হতে পারে, যা ট্রাইবুনালের বিজ্ঞ বিচারকবৃন্দ তাদের সুবিবেচনা প্রয়োগ করে চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ করার যোগ্যতা রাখেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ সংঘটনের কারণে সংগঠন হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের কোন আদালতে কোন মামলাই বর্তমানে চলছে না। সুতরাং, জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে বিচারাধীন নিবন্ধন সংক্রান্ত মামলাটির সাথে ট্রাইবুনালে জামায়াতে ইসলামীর বিচারের কোন সম্পর্ক নেই।
পরিশেষে, আইসিএসএফ মনে করে ট্রাইবুনালের আইন অনুযায়ী সংগঠন হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বিচার কিংবা শাস্তিযোগ্যতার বিষয়টি একটি বিচার্য বিষয়, যা চূড়ান্তভাবে নির্ধারণের এখতিয়ার কেবলমাত্র ট্রাইবুনালের মাননীয় বিচারকদের হাতে ন্যস্ত। তাই আইসিএসএফ গভীর উদ্বেগের সাথে মনে করে – আইনমন্ত্রীর পক্ষ থেকে এ ধরণের আগাম বক্তব্য এবং আইনের আগাম ব্যাখ্যা শুধুমাত্র জনমনে বিভ্রান্তিই নয়, তা একটি স্বাধীন ট্রাইবুনালের বিচার প্রক্রিয়ার উপর সরকারের হস্তক্ষেপ বা প্রভাব বিস্তার হিসেবে গণ্য হওয়ার সুযোগও তৈরী করে।
আইসিএসএফ এর পক্ষ থেকে প্রত্যাশা থাকবে জামায়াতের বিরুদ্ধে ট্রাইবুনালে তদন্তকৃত মামলাটি তার নিজস্ব গতিতে অগ্রসর হবে।
[Download link:20140530-response to lm statement]
=================
NOTES:
[a] The amended section 3(1) of the International Crimes (Tribunals) Act 1973 reads: “A Tribunal shall have the power to try and punish any individual or group of individuals, or ORGANISATION, or any member of any armed, defence or auxiliary forces, irrespective of his nationality, who commits or has committed, in the territory of Bangladesh, whether before or after the commencement of this Act, any of the crimes mentioned in sub-section (2).” [b] Section 20 of the ICTA’73 reads:“(1) The Judgement of a Tribunal as to the guilt or the innocence of any ACCUSED PERSON shall give the reasons on which it is based: Provided that each member of the Tribunal shall be competent to deliver a judgement of his own.
(2) Upon conviction of an ACCUSED PERSON, the Tribunal shall award sentence of death or SUCH OTHER PUNISHMENT proportionate to the gravity of the crime as appears to the Tribunal to be just and proper.”
you might also like
Declare Jamaat-e-Islami (Bangladesh) a terrorist organisation
ICSF statement on the assassination of Ananta Bijoy Das